Trisangam international refereed journal

Trisangam international refereed journal
Not a member yet
    308 research outputs found

    Bangla Sahitya Magic Realism : Kinnar Rayer Noyer Dashaker Galpo/ বাংলা সাহিত্যে ম্যাজিক রিয়ালিজম : কিন্নর রায়ের নয়ের দশকের গল্প

    No full text
    জাদু বলতে বোঝায় অ-সাধারণ সংঘটন, ভৌতিক বা বিজ্ঞান ব্যাখ্যাতীত কোনো ঘটনা। জাদুবাস্তববাদে ‘জাদু’ কথাটি জীবনরহস্য অর্থেই আসে, ভূতের আবির্ভাব লোকজনের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, অলৌকিক ব্যাপার, অ-সাধারণ ক্ষমতা, অদ্ভুত আবহ এ-সবই আনা হয় বাস্তবকে বোঝানোর জন্য। জাদুর খেলা, জাদুকরের কারসাজি-জাদু বাস্তবের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। বাস্তববাদ কথাসাহিত্যের ক্ষেত্রে জরুরি ব্যাপার। আর বাস্তববাদের সূত্রে আসে পরাবাস্তববাদের কথা। জাদুবাস্তব এবং পরাবাস্তব এ-দুটোই সাহিত্য ও শিল্পের আন্দোলন কিন্তু পরাবাস্তব বাস্তব সাহিত্যের প্রতি খড়গহস্ত, কারণ তা বুর্জোয়া সমাজের ধারণা, কিন্তু জাদুবাস্তব বাস্তবকে অবজ্ঞা করে না। বাংলা সাহিত্যে ম্যাজিক রিয়ালিজমের আলোচনা করতে গেলেই স্মরণে আসে কিন্নর রায়ের কথা

    Social consciousness in Buddhadev Basu’s poetry in the 1940s and 1950s/ চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকে বুদ্ধদেব বসুর কবিতায় সমাজ চেতনা

    No full text
    বাংলা আধুনিক কবিতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি বুদ্ধদেব বসু। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক নাট্যকার, প্রাবন্ধিক এবং অনুবাদক। বুদ্ধদেব বসু (১৯০৮-১৯৭৪)। ১৯২৫ সালে ‘মর্মবাণী’ প্রকাশ করেন। ‘বন্দীর বন্দনা’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে আধুনিক কবিতার যুগে প্রবেশ করেন। অন্যান্য আধুনিক কবিদের মতো তিনি রবীন্দ্র কাব্যাদর্শ থেকে সরে আসেন। কল্লোলের কোলাহলে তিনিও সরব এবং স্বপ্রতিভ। তাঁর কবিতায় চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকে দেশভাগ পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সমস্যা স্পষ্ট রূপে ধরা পড়েছে

    Ashapurna Debir Upannyas ‘Pratham Pratishruti’, ‘Subarnalata’, ‘Bakulkatha’, Banam Narimuktir Chetana/ আশাপূর্ণা দেবীর উপন্যাস ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’, ‘সুবর্ণলতা’, ‘বকুলকথা’ বনাম নারীমুক্তির চেতনা

    No full text
    নারীর প্রকৃত অবস্থান কি এই সমাজে, কী তার তাৎপর্য আর কী বা তার উত্তরণের সম্ভাবনা—বিদেশি তাত্ত্বিকদের পাশাপাশি ভারতীয় এবং বিশেষভাবে বাঙালি চিন্তাবিদেরা সে সব ভেবেছেন। উনবিংশ-বিংশ শতকের সামাজিক ইতিহাস পর্যালোচনা করে নারীর সামাজিক অবস্থান সংক্রান্ত যেসব তথ্য আমরা পাই, আশাপূর্ণা দেবী সেইসব তথ্যকেই কাহিনী ও জীবনের রসে জারিত করে ‘সত্যবতী’, ‘সুবর্ণলতা’ ও ‘বকুল’-এর মধ্য দিয়ে নারী মুক্তির চেতনাকে আত্মমর্যাদার দর্শনে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছেন এবং তাঁর এই ত্রয়ী উপন্যাস উপস্থিত করেছেন—‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’, ‘সুবর্ণলতা’, ‘বকুলকথা’

    Kabikangkan Mukunda chakrabarty o Ramananda jatir Chandi mangal kabya : ekti tulanamulak adhyan/ কবিকঙ্কণ মুকুন্দ চক্রবর্তী ও রামানন্দ যতির চণ্ডীমঙ্গলকাব্য : একটি তুলনামূলক অধ্যায়ন

    No full text
    চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই আমাদের ‘মঙ্গলকাব্য’ সম্পর্কে আলোচনা করা দরকার, অর্থাৎ মঙ্গলকাব্য কি? এ প্রসঙ্গে বলতে হয় যে, মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ শাখা মঙ্গলকাব্য। যা মূলতঃ খ্রীষ্টিয় পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর ফসল। ড.অসিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘বাংলা সাহিত্যের সম্পূর্ণ ইতিবৃত্ত’ বইতে মঙ্গল কাব্য বলতে বুঝিয়েছেন বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা প্রচার সম্মন্ধীয় এক প্রকার আখ্যানকাব্যকে। মানুষ বিপদে পড়লে দেব-দেবীদের শরণ করেন। বাংলার মঙ্গলকাব্যগুলির উৎপত্তির মূলে এই ধরনের আপদ-বিপদের প্রভাব আছে। যেমন– সাপের হাত থেকে আত্মরক্ষার জন্য সর্পদেবী মনসার পূজা, তেমনি হিংস্র পশুর হাত থেকে রক্ষা পেতে দেবী চণ্ডীর পূজা। সাধারণ ভাবে বলা যায় বেশীর ভাগ মঙ্গল কাব্যেই দেবীর পূজা প্রচারিত হয় এবং এই পূজা প্রচারের জন্য কোন না কোন ভক্তকে অভিশাপ প্রাপ্ত হতে হয়ে আসতে হয় মর্ত্যে। কার্য সমাপ্ত ঘটলে তারা আবার ফিরে যান স্বর্গে।             বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে দেব-দেবীর প্রচারমূলক এক বিশেষ সাহিত্য শাখা হল ‘মঙ্গলকাব্য’। এই মঙ্গলকাব্যগুলি যারা শুনতেন বা যারা শোনাতেন, সকলেরই মঙ্গল হত। এই মঙ্গল কাব্য ধারায় যে মঙ্গলকাব্যগুলি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য, সেগুলি হল- মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল, শিবায়ন ও অন্নদামঙ্গল প্রভৃতি। এই সব মঙ্গলকাব্যগুলি মোটামুটি ভাবে পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর সময়কালে রচিত হয়েছিল। এই দীর্ঘ সময়কালে শাসক সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কাব্যের মূল কাঠামো এক থাকলেও সামাজিক রীতি-নীতি, খাদ্য, পোষাক, আচার-আচরণের বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে

    Nirbachita Chata Galper Aloke Premendra Mitrer Manab Prem/ নির্বাচিত ছোটগল্পের আলোকে প্রেমেন্দ্র মিত্রের মানবপ্রেম

    No full text
    বিশ্বের চারজন সেরা গল্পকার হিসেবে এডগার অ্যালন পো, মোঁপাসা, অন্তন চেকভ এবং রবীন্দ্রনাথের নাম করা যায়। তেমনই বাংলা ছোটগল্পের লেখক হিসেবে অন্যতম সেরা ছিলেন—প্রেমেন্দ্র মিত্র, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, শৈলজানন্দ এবং বুদ্ধদেব বসু। এই সকল বাংলা ছোটগল্প লেখকদের মধ্যে প্রেমেন্দ্র মিত্র একটি পৃথক স্থান দখল করেছিলেন, এ বিষয়ে কারো দ্বিমত থাকা সঠিক নয়। প্রেমেন্দ্র মিত্রের গল্পে তাঁর বিষয় নির্বাচন, লেখনী শৈলী এবং সর্বপরি প্রকাশভঙ্গিতে স্বতন্ত্র আবেদনের অধিকারী

    Ketaka das Khemanander Manosa Mangolkabyo : Narir Attoprotistha, Pratibadi Sattar Akhyan/ কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গলকাব্য : নারীর আত্মপ্রতিষ্ঠা, প্রতিবাদীসত্তার আখ্যান

    No full text
    উনিশ শতকেই আমাদের পরিচয় ঘটল পাশ্চাত্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঙ্গে। অনেকে এই সময়ে ইউরোপীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করে নেওয়ার চেষ্টা করলেন। ফলত নৈতিক কারণেই মেয়েদের প্রতিও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটতে শুরু করল। উনিশ শতকেই  নবচেতনার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠল, মেয়েদের জীবনযাত্রার মানোয়ন্নের নানা সামাজিক উদ্যোগ। সতীদাহ প্রথা, কৌলীন্য প্রথা, প্রভৃতির বিরুদ্ধে ও বিধবাবিবাহের পক্ষে একদিকে যেমন আন্দোলন দানা বাঁধল, তেমনি অন্যদিকে পুথিগত শিক্ষায় মেয়েদেরকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য গড়ে তোলা হল বিভিন্ন বিদ্যালয়। ধীরে ধীরে দিন যত এগিয়েছে ফেমিজম এর ধারণা তত সুদৃঢ় হয়েছে। বর্তমান দিনে নারীবাদ তথা নারীবাদী আন্দোলন নিয়ে সচেতনতা যেমন বেড়েছে, তেমনি এ সম্পর্কে আলাদা আলোচনা, লেখা-লিখি যথেষ্ট হচ্ছে।এইভাবে নারীপ্রগতির  ভাবনা ক্রমশ গতি পেতে থাকে এবং স্ত্রী শিক্ষার বিকাশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নানা আইন জারি হয়। ফলে নারীর মনন ও চিন্তনে নিজেদের সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেতে থাকে। আজকের নারীবাদ ও নারীবাদীদের চিন্তাভাবনা, আন্দোলন এটা ঠিকই আছে। তবে আমরা যদি বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করি তাহলে দেখা যাবে উনিশ একুশ শতকে নয়, নারীকে মানবী হিসাবে দেখা, তার স্বাধীনচেতনা স্বাতন্ত্র্যবোধ মধ্যযুগের সাহিত্যেও বিভিন্ন ধারায় টুকরো ভাবে এসেছে। একটু যদি পিছিয়ে যাই আমরা তাহলে লক্ষ করবো প্রাগাধুনিক বাংলা সাহিত্যে মঙ্গলকাব্যের নারীরাও ছিলেন অনেকটাই সাহসী ও ব্যতিক্রমী। তারাও ছিলেন যথার্থই প্রতিবাদিনী। সমাজের নানা সংস্কারের মধ্যেও, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবাদের সুর তাঁদের কণ্ঠেও ধ্বনিত হয়েছে। মনে রাখতে হবে আজকের দিনের মত সামাজিক নানা আন্দোলনের প্রভাব কিন্তু সমাজে তখন প্রভাব ফেলেনি। তবুও মধ্যযুগের বিভিন্ন কবিদের কাব্যে বিক্ষিপ্তভাবে নারীর প্রতিবাদী রূপটি পরিস্ফুট হয়েছে। তবে গভীরভাবে এসেছে কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গল কাব্যে

    Afsar Ameder Kissa Series : Purush tantric Samajer Biruddhye Narittyer Ek Abhyontarin Bishfaran/ আফসার আমেদের কিসসা সিরিজ : পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে নারীত্বের এক অভ্যন্তরীণ বিষ্ফোরণ

    No full text
    আমাদের সমাজ পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে। পিতৃতান্ত্রিক এই সমাজে নারীর সমানাধিকার ও নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে নানারকম আলোচনা, ভাষণ, অঙ্গীকার হলেও হাতে গোনা কয়েকজনের কথা বাদ দিলে আপামর নারীর অবস্থান যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থেকে গেছে। সমাজ মেয়েদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রাচীন ভারতের মনুর নিষেধাজ্ঞা বা উনিশ শতকের ইংল্যান্ডের ভিক্টোরিয়ো সামাজিক আদর্শ সযত্নে লালন করে চলেছে নতুন নতুন রাংতায় মুড়ে। যুগ যুগ ধরে স্থান কাল পাত্র নির্বিশেষে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের প্রাধান্য অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টায় চলেছে নারী নিয়ন্ত্রণ  প্রচলিত ঐতিহ্য, আচার আচরণ, সামাজিক রীতি নীতি, ধর্ম, সংস্কার, আইন, বিবাহ ব্যবস্থা প্রভৃতি সামাজিক কাঠামোর বেড়াজালে আবদ্ধ মেয়েরা। আধুনিক সমাজের মেয়েরা শিক্ষিত হলেও উচ্চ শিক্ষা লাভ করলেও প্রতিনিয়ত তাদের কে দমন করে চলেছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখরাঙানি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে নারীর যে প্রতিবাদ বা অভ্যন্তরীণ বিষ্ফোরণ তাকেই খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন বিগত শতকের অন্যতম প্রতিভাবান কথাকার আফসার আমেদ। কোরানশাসিত, মোল্লাশাসিত, পুরুষশাসিত সমাজে নারীর অবস্থান এবং এই শাসনের বিরুদ্ধে নারীর প্রতিবাদ এবং বিস্ফোরণের ছবি আমরা দেখতে পায় তাঁর কিসসা সিরিজের কিসসা গুলিতে। তাঁর কিসসা সিরিজের নায়িকারা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখরাঙানিকে নসাৎ করে, সমাজ সংস্কারের বেড়াজালকে ছিন্ন করে ব্যক্ত করতে চেয়েছে নিজেকে। বোরখার অন্তরালে প্রকাশ পেয়েছে তাদের প্রতিবাদী সংগ্রামী রূপ, মনের ভিতরতন্ত্রীতে ফল্গু ধারার মতো বয়ে চলা অদম্য কামনা বাসনার লীলা। সমাজ সম্প্রদায়ের সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নারী স্বাধীনতার একরকম পাল্টা হাওয়া বইয়ে দিয়েছেন আফসার তাঁর কিসসার অন্দরমহলে বলা ভালো নারীর অন্দরমহলে।      আফসারের কিসসা সমগ্রের প্রতিটি কিসসার কেন্দ্রে আছে এক একটি মেয়ে। ধর্মশাসিত, কোরানশাসিত, পুরুষশাসিত সমাজের অচলায়তনে আবদ্ধ জাহান, শাবানা, শাহানাজের কথা যেমন লেখক বলেছেন, তেমনি অপরদিকে, রওশননেশার বুদ্ধিমত্তা, বোরখার অন্তরালে রেহানার চরম স্বাধীনতার কথা, স্বাধীন মৈথুন কল্পনার কথাও বলেছেন। কামার্ত – লোভার্ত নানা ধরণের পুরুষদের রেহানার পশ্চাৎ অনুধাবনের মধ্যে দিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বেওকুফিকেও ব্যক্ত করেছেন লেখক। প্রকাশিত হয়েছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে রেহানার আভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ। ভিখারিনি রিজি ও মজমুনের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন অভিনব নারীকে। ভিখারিনি রিজি অনায়াসে দলে গেছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিত্তবান পুরুষ সাহিলকে, ধূলিসাৎ করেছে তার দাম্ভিকতাকে। আর মজমুন পুরুষতন্ত্রকে হঠিয়ে গড়ে তুলেছে এক অভিনব নারীতন্ত্র ও নারী অনুশাসন

    Galpokar Premendra Mitrer Nirbachita Galpe Nagarik Chetanar Unmachan/ গল্পকার প্রেমেন্দ্র মিত্রের নির্বাচিত ছোটগল্পে নাগরিক চেতনার উন্মোচন

    No full text
    রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা কথাসাহিত্যে দিক পরিবর্তনকারী এক ক্রান্তিকালের বাণীশিল্পী প্রেমেন্দ্র মিত্র। জীবনের শত সহস্র আশাভঙ্গের কাহিনী, রিক্ত হৃদয়ের দীর্ণতা, একটি প্রাণস্পন্দনের আশ্চর্য উদ্ভাসন, জীবন প্রত্যয় থেকে একপ্রকার আশাবাদী মন সব মিলিয়ে তাঁর সাহিত্যের শিল্পরীতি ও অর্থনৈতিক সংকট ও সমাজ পরিবর্তনের কালচক্রে উচ্চ, মধ্য ও নিম্নবিত্ত নাগরিক জীবনের হাহাকার, প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তির দোলাচলতা এমন নৈপুণ্যে বিশ্লেষিত হয়েছে, যা আলোচ্য প্রবন্ধে আলোকপাত করার চেস্টা করা হয়েছে। এই নাগরিক চেতনায় তিনি ‘ছোট সুখ ছোট ব্যাথা’র যে তত্ত্ব সেই দ্বান্দ্বিকতাকে অত্যন্ত সংবেদনশীল, কখনো সাংসারিক রোমান্টিকতার ক্ষুদ্র পরিসরে পৃথক স্বাতন্ত্র‍্যে ব্যাখ্যায়িত করেছেন। একদিকে রাজনৈতিক ক্ষমতা, সামাজিক গতিশীলতা, শ্রমের বিভাজন প্রেমেন্দ্র মিত্রের বহু লেখনীকে সমৃদ্ধ করেছে, অন্যদিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতাবাদ, বানিজ্য সম্প্রসারণ, নগর সৃষ্টি বা আধুনিক নগরায়ণের ধ্যান-ধারণা গড়ে উঠতে থাকে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে বিশ শতকের তিরিশের দশক থেকে বাংলা সাহিত্যে শহরের কথা ১৯২৯ এ প্রকাশিত ‘পথের পাঁচালী’, ১৯৩১ এ প্রকাশিত ‘চৈতালি ঘূর্ণি’, ১৯৩৬ এ প্রকাশিত ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’র মতো কালজয়ী উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে নাগরিক চেতনা নানা আঙ্গিকে সঞ্জাত হয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনব্যাবস্থার পরিশীলিত রুচির আগমন, আত্মপরিচয়ের সংকট নাগরিক চেতনার রঙে রঞ্জিত হয়েছে লেখকের কালজয়ী সৃষ্টিতে। প্রেমেন্দ্র মিত্র মধ্যবিত্ত জীবনকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলেই নাগরিক চেতনা ও মহানগরের সংকট, যান্ত্রিকতা, মনস্তাত্ত্বিকতা, শিকড় থেজে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সূত্রপাত, অর্থনৈতিক শোষণের কাছে বিকৃত মনুষ্যত্ব, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ব অর্থনৈতিক অধঃপতন অত্যন্ত সূচারুভাবে বর্ণিত হতে দেখা গেছে। এরই মাঝে তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে মানুষের স্বপ্ন, আশা, কল্পনা, জেগে থাকে। মহানগরে যন্ত্রের নির্মোঘ যেমন সত্যি, তেমনি মানুষের উৎসাহ জেগে থাকাও সত্যি, এই দুটি চিত্রই এখানে লেখক অত্যন্ত মর্মস্পর্শী আবেদনে প্রকাশ করেছেন। মহানগরের যান্ত্রিক কলরব, জটিলতা, আলোকোজ্জ্বল জাঁক-জমক, মানুষের বিবেক বুদ্ধি, অদম্য উৎসাহ মধ্যবিত্ত জীবনের কথাকার রূপে তাই লেখক জানিয়েছেন, যেন পাঠক দর্শক তাঁর সঙ্গেই নগর জীবনকে প্রত্যক্ষ করতে করতে এগিয়ে চলুক, যে মহানগরের চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আকাশের তলায় পৃথিবীর মতো অজস্র ক্ষত, আবার যে মহানগর কখনো উঠেছে মিনারে, মন্দিরের চূড়ায়, আর অভ্রভেদী প্রাসাদ শিখরে তারাদের দিকে, প্রার্থনা মতো মানবাত্মার। তিনি তাই তাঁর সাহিত্যিক ধ্যান-ধারণার মধ্যে একদিকে মানুষ ও অন্যদিকে নগরকে উপজীব্য করেছেন। মধ্যবিত্তের সংকটে যেখানে রোমান্টিকতা ক্ষুদ্র বিলাসিতা মাত্র, তবুও সেখানে মানুষ বেঁচে থাকার আশা ছাড়েনা। এই ভাবনাই ‘পুন্নাম’, ‘শুধু কেরানী’, ‘হয়তো’, ‘মহানগর’, ‘সংসার সীমান্তে’ প্রভৃতি গল্পে নগর সভ্যতার ভিত্তিভূমি রচনা করেছে। তাই পরিশেষে একথাই বলা যায় কথাসাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র তাঁর আজীবন ব্যাপী সাহিত্য সাধনায় ‘পুন্নাম’-এ নাগরিক সংগ্রাম, ‘হয়তো’-তে সামন্ততান্ত্রিক রূপ, শহরের ভীতি, ‘সংসার সীমান্ত’-তেও শহরের যান্ত্রিকতা, কলুষতা, ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ এ শহরবাসী যুবকের মৌখিক সহানুভূতির ঊর্ধ্বে মেকী মূল্যবোধ বা মূল্যবোধহীনতা, তার দ্বারা যামিনীর প্রতারিত হওয়ার চিত্রগুলি এত সংবেদনশীল ভাবে প্রত্যক্ষ গ্রাহ্য হয়েছে যা নিঃসন্দেহে পাঠক দর্শককে ভাবিয়ে তোলে প্রবন্ধ শেষে একথা বললে অত্যুক্তি হয়না

    0

    full texts

    339

    metadata records
    Updated in last 30 days.
    Trisangam international refereed journal is based in India
    Access Repository Dashboard
    Do you manage Trisangam international refereed journal? Access insider analytics, issue reports and manage access to outputs from your repository in the CORE Repository Dashboard!